বিটকয়েন(bitcoin) কি? ভার্চুয়াল মুদ্রার খুটিনাটি।

বিটকয়েন(BITCOIN) কি? ভার্চুয়াল মুদ্রার খুটিনাটি।

₿ বর্তমান সময়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ভার্চুয়াল মুদ্রা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ঠিক তেমনি একটি ভার্চুয়াল মুদ্রার নাম বিটকয়েনআর সবার মনে একটাই প্রশ্ন বিটকয়েন(BITCOIN) কি? হ্যা বন্ধুরা আপনারা ঠিকই ভাবতে পেরেছেন যে এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি বিটকয়েন এর  উপর ।  সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়লে আশাকরি বিটকয়েন সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে যাবেন।

বিটকয়েন(bitcoin)
বিটকয়েন(bitcoin) কি?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়লে আপনি যা যা জানতে পারবেন-

  1. বিটকয়েন কি?
  2. ১ বিটকয়েন সমান কত টাকা?
  3. বিটকয়েনের ইতিহাস।
  4. বিটকয়েন মাইনিং?
  5. বিটকয়েনের সুবিধা অসুবিধা কি কি?
  6. বিটকয়েন পাওয়া যায় কীভাবে? 
  7. বিটকয়েনে টাকা বিনিয়োগ কি নিরাপদ?  
  8. বাংলাদেশে কি বিটকয়েন বৈধ? 
  9. বিটকয়েনের বিকল্প মুদ্রাগুলো কি কি?
  10. কোন কোন দেশগুলো বিটকয়েন কে স্বীকৃতি দিয়েছে? 


বিটকয়েন () কি?

বিটকয়েন কি?

বিটকয়েন, ক্রিপ্টো-কারেন্সি বা ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ডিজিটাল মুদ্রা। অস্তিত্ব না থাকলেও মূল্য কিন্তু অনেক। আর আদান প্রদান এর একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট।

ধরুন আপনি বিকাশে টাকা পাঠাচ্ছেন আপনার বাবাকে। বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে আপনি টাকা দিলেন, এই টাকার অস্তিত্ব আছে। কারণ আপনি নিজ হাতে টাকাটি দিচ্ছেন বিকাশ এজেন্টের কাছে।

এখন এই টাকা বিকাশ এজেন্ট তার মোবাইল থেকে আরেকটি নাম্বারে ভার্চুয়ালি যে টাকার পরিমাণটা পাঠায় এটার কোনো অস্তিত্ব নেই। তারপরেও বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক এটিকে স্বীকৃতি দেয়ার কারণে এটি বৈধ।

মূলত এই ভার্চুয়াল টাকা আদান প্রদান কে ভার্চুয়াল কারেন্সি বলা হয়।  আর ভার্চুয়াল কারেন্সি গুলোর বিভিন্ন নাম হতে পারে। 

যেমনঃ বিটকয়ে, ইথেরিয়াম, লিটেকইন, ডেজেকইন ইত্যাদি।


১ বিটকয়েন সমান কত টাকা?

আমরা সবাই জানি প্রত্যেকটি কারেন্সির একটি সংক্ষিপ্ত নাম রয়েছে যেমন আমেরিকার কারেন্সির ডলার কে সংক্ষেপে ইউএসডি  USD  ঠিক তেমনি বিটকয়েন কে সংক্ষেপে বিটিসি(BTC) বলা হয়।

 

বন্ধুরা এক বিটকয়েন সমান USD তে


1 BTC = 55,986.90 United States Dollar


আর আমরা এত ডলারকে যদি কনভার্ট করি বাংলাদেশি টাকায় তাহলে


1 BTC = 4,719,746.72 Bangladeshi Taka


আপনি যদি একটি বিটকয়েন ইনকাম করতে পারেন তাহলে আপনি 4,719,746.72 বাংলাদেশি টাকার মালিক হয়ে যাবেন।


বিটকয়েনের ইতিহাস।

১৮/০৮/ ২০০৮ সালে BITCOIN.ORG ডোমেইন নামটি নিবন্ধন করা হয়, একই বছরের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো বিটকয়েন(Bitcoin) কি? এবং কিভাবে কাজ করে তা প্রকাশ করেন METZDOWD ওয়েব সাইটের মেইলিং লিস্টে। 

সেই থেকে ধারণা করা হয় ২০০৮ সালের শেষের দিকে সাতোশি নাকামোতো(Satoshi Nakamoto) ছদ্মনামের এক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এই ক্রিপ্টোকারেন্সির বা ভার্চুয়াল কারেন্সি বা ভার্চুয়াল মুদ্রাব্যবস্থার প্রচলন করেছিলেন। যা পরবর্তীতে পিয়ার-টু-পিয়ার(Peer-to-peer) মুদ্রা বলে অভিহিত করা হয়।

পিয়ার-টু-পিয়ার(Peer-to-peer) মানে হল- গ্রাহক থেকে গ্রাহকের নিকট লেনদেন করা যায় এমন একটি ব্যবস্থা।

বিটকয়েন লেনদেন এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় অনলাইনে,গ্রাহক থেকে গ্রাহকের নিকট লেনদেন সম্পন্ন হয় একটি উন্মুক্ত সোর্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে।

বিটকয়েন মাইনিং(Mining)


বিভিন্ন মেশিনের মাধ্যমে যেমন খনি থেকে স্বর্ণ, হীরা, ইত্যাদি মূল্যবান বস্তু মাইনিং(Mining) করে বের করা হয় ঠিক তেমনি একটি কম্পিউটারের মাধ্যমে বিটকয়েন মাইনিং(Mining) করা হয়। যে বিটকয়েন ‘মাইনিং’ করে তাকে ‘বিটমাইনার’ বলে।

বিটকয়েনের জন্য বিশেষায়িত এএসআইসি(ASIC) এখন বিটকয়েন মাইনিং(Mining) এর জন্য প্রধান উপায়ে পরিণত হয়েছে এবং জিপিইউ(GPU) এর গতিকে ৩০০ গুণেরও বেশি ছাড়িয়ে গেছে।

বিটকয়েনের সুবিধা অসুবিধা কি কি?

বিটকয়েন এর সুবিধা সমূহঃ

  1. লেনদেনের সময় কোন ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়না।
  2. লেনদেন কারীর পরিচয় গোপন রাখা যায়।
  3. খুব অল্প সময়ে অধিক পরিমাণ টাকা যেকোনো জায়গায় পাঠানো সম্ভব।
  4. বিটকয়েন সঞ্চয় এর মাধ্যমে পরবর্তীতে অধিক মূল্যে বিক্রি করা সম্ভব। 

বিটকয়েনের অসুবিধা সমূহঃ

  1. যেহেতু লেনদেনে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকেনা জালিয়াতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
  2. কোন সেবার না পেলে তার মূল্য ফেরত পাওয়া যায় না। 
  3. মাইনর ট্রানজেকশন এপ্রুভ করতে মাত্রাতিক্ত সময় নিয়ে থাকে।
  4. বিটকয়েন এর বাজারমূল্য অস্থিতিশীল। 
  5. বিটকয়েনের ওয়ালেট নষ্ট হয়ে গেলে তা আর ফেরত পাওয়া যায় না। 
  6. বেআইনি কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

বিটকয়েন  কীভাবে পাওয়া যায়?

বিটকয়েন কিভাবে পাওয়া যাবে এ প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে একটা কথা বলে নেয়া ভালো, ভাল যেহেতু বাংলাদেশ সরকার বিটকয়েন কে অবৈধ ঘোষণা করেছে 2014 সালে । অর্থাৎ বিটকয়েন(bitcoin) বাংলাদেশের জন্য বৈধ নয়।


তাই আমি বলবো বিটকয়েন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। বেশ কয়েকটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি চাইলে বিটকয়েন কেনাবেচা করতে পারবেন। 


কিন্তু আমি চাই না আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার পর কোন মানুষ বিটকয়েন কেনাবেচা করতে অনুপ্রাণিত হক। তাই কোথায় বিটকয়েন(bitcoin) পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে আর বললাম না।


বিটকয়েনে টাকা বিনিয়োগ কি নিরাপদ? 


ইতিমধ্যে আপনার জেনেছেন ক্রিপ্টোকারেন্সি, ভার্চুয়াল কারেন্স, ডিজিটাল কারেন্সি বা অনলাইনে ভার্চুয়াল মুদ্রা সম্পর্কে।  এইসব ভার্চুয়াল মুদ্রা গুলোকে তখনই নিরাপদ বলা যাবে যখন এগুলো কোন আইনের অধীনস্থ থাকে।


সেখানে বিটকয়েন কে কোন কোন দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে আবার কোন কোন দেশ স্বীকৃতি দেয়নি, অবৈধ ঘোষণা করেছে।  এখন ব্যক্তির উপর নির্ভর করে ব্যক্তি কোন দেশের নাগরিক। যদি তার দেশ বা রাষ্ট্র বিটকয়েন কে স্বীকৃত বলে গণ্য করে তাহলে আপনি চোখ বন্ধ করে বিট কয়েনে বিনিয়োগ করতে পারেন।


যেহেতু বাংলাদেশ সরকার বিটকয়েন কে অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করেছে সেহতু আমি আশা করব কোন বাংলাদেশী ভাইবোনেরা বিটকয়েনে বিনিয়োগ করবেন না। বিটকয়েনে বিনিয়োগ করাটা কোনভাবেই নিরাপদ নয় বাংলাদেশের  সাধারণ জনগণের জন্য।


বাংলাদেশে কি বিটকয়েন বৈধ? 

বিটকয়েন বেচাকেনা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অবৈধ। বিটকয়েনে বিনিয়োগ করাটা কোনভাবেই নিরাপদ নয় বাংলাদেশের  সাধারণ জনগণের জন্য। তাই লোভে পড়ে কোন ভুল সিদ্ধান্ত না নেওয়াটাই ভালো হবে।

বন্ধুরা, বিটকয়েন নিয়ে একদল চক্র মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এবং মানুষ পড়ছে বিপদে। তাই আশা করি আপনিও এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন এবং আপনার প্রতিবেশীদের ও সতর্ক করেন।

বিটকয়েনের বিকল্প মুদ্রাগুলো কি কি? 

  • ইথেরিয়াম(Etherium)
  • লিটেকইন(Litecoin)
  • ডেজেকইন(Dogecoi)

কোন কোন দেশগুলো বিটকয়েন কে স্বীকৃতি দিয়েছে?

  • কানাডা (Canada)
  • নেদারল্যান্ড (Netherlands)
  • জর্জিয়া (georgia)
  • এস্টোনিয়া (Estonia)
  • স্লোভেনিয়া (Slovenia)
  • দক্ষিণ কোরিয়া (South Koria)
  • ডেনমার্ক (Danmark)
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United state)
  • সিঙ্গাপুর (Singapur)
  • জাপান (Japan)

বন্ধুরা, আপনারা জানলে অবাক হবেন এই সমস্ত দেশে বিটকয়েন বৈধ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুলো। শুধু তাই নয় এই সব দেশে রয়েছে বিটকয়েন এর জন্য আলাদা এটিএম ব্যবস্থা।

স্বভাবতই উন্নত দেশগুলো উন্নত চিন্তা ভাবনা নিয়েই সবসময়ই পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। ভবিষ্যতে বিটকয়েন আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সবশেষে আপনাদের কাছে একটি প্রশ্ন রেখে যেতে চাই কমেন্টে জানাবেন।

আপনার মতে বাংলাদেশে বিটকয়েন বৈধতা দেয়া উচিত, না বৈধতা উচিত দেয়া উচিত নয়?

FAQ


১। বিটকয়েন এর দাম কত?

উত্তরঃ বর্তমানে ১ বিটকয়েন = 4,719,746.72 বাংলাদেশী টাকা। তবে এটির দাম পরিবর্তন হতে থাকে।

২। বিটকয়েন ওয়েবসাইট?

উত্তরঃ মূলত bitcoin.org এটি বিটকয়েন এর অফিসিয়াল সাইট।

৩। বিটকয়েন কি বাংলাদেশে বৈধ?

উত্তরঃ বাংলাদেশ সরকার বিটকয়েন কে অবৈধ ঘোষণা করেছে 2014 সালে । অর্থাৎ বিটকয়েন বাংলাদেশের জন্য বৈধ নয়।

৪। বিটকয়েন থেকে বিকাশে টাকা যাবে কি না?

উত্তরঃ এখন ও পর্যন্ত এটি সম্ভব নয়।


আর ও পড়তে নিচের দেয়া লিঙ্কে ক্লিক করুন-

বন্ধুরা এই ছিল বিটকয়েন(bitcoin) কি? ভার্চুয়াল মুদ্রার খুটিনাটি নিয়ে সহজ কিছু আইডিয়া। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভাল লাগে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট এ আপনার মতামত জানাতে পারেন। 
আমাদের সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post