ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং এর A টু Z গাইডলাইন

ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং এর A টু Z গাইডলাইন 

ফ্রিল্যান্সিং কি? কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করব ? ফ্রিল্যান্সিং এর A টু Z গাইডলাইনফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) একটি ইংরেজী শব্দ যার অর্থ মুক্ত পেশা। ফ্রিল্যান্সিং মানে, একটি নির্দিষ্ট কম্পানির অধীনে কাজ না করে একই সঙ্গে একাধিক কোম্পানির বা ব্যক্তির কাজ করে দেয়া এবং যার বিনিময়ে সেই কোম্পানির বা ব্যক্তিটি আপনাকে মূল্য পরিশোধ করবে।



তাহলে আসুন জেনে নেই ফ্রিল্যান্সিং এ আসলে কি কি ধরনের সেবা বা সার্ভিস বা কি ধরনের কাজ হয়ে থাকে।


ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং(Outsourcing) কে বিভিন্ন ধরনের কাজ হতে পারে যেমন-

  • ওয়েব ডিজাইন (Web design)
  • ওয়েব ডেভলপমেন্ট (Web development)
  • ভিডিও এডিটিং (Video editing)
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search engine optimization)
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics design)
  • ডাটা এনালাইসিস (Data analysis)
  • ডাটা এন্ট্রি (Data entry)
  • কপি পেস্ট (Copy paste)
  • পডকাস্ট (Podcast)
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (Virtual Assistant)
  • মিউজিক প্রোডাকশন (Music production)
  • আইটি সাপোর্ট (IT support)

একজন ওয়েব ডেভলপার (Web Developer) হওয়ার সম্পূর্ণ গাইড লাইন। 

এ ছাড়াও অসংখ্য ধরনের কাজ রয়েছে, যেসব কাজ করে প্রতিনিয়ত একজন ফ্রিল্যান্সার ইনকাম  করে হাজার হাজার ডলার। দূর হচ্ছে বেকারত্বের হার । হয়ে উঠেছে নতুন নতুন উদ্যেক্তা।


আসুন জেনে নেই কিভাবে আপনি শুরু করতে পারেন আপনার স্বপ্নের ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing)  পেশাটি?

ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) শুরু করতে আপনার যা যা করতে হবে। তাই নিচের লেখাগুলো একটু ভালোভাবে পড়তে থাকুন।

➤ প্রথমে নির্বাচন করুন আপনি কোন কাজটি করতে চান। সে কাজের উপর একটা ভালো দক্ষতা অর্জন করুন।  আপনার দক্ষতা অর্জনে গুগল এবং ইউটিউব এর সাহায্য নিতে পারেন। অথবা আপনার কাজের রিলেটেড কোন  প্রতিষ্ঠান এ গিয়ে কোর্স করে নিতে পারেন।


শুধু আপনার নির্বাচিত বিষয়টির উপর দক্ষতা অর্জন করলেও হবে না । একই সাথে আপনাকে ইংরেজিতে  ভালো দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ইংরেজি ভালোভাবে বুঝতে, হবে বলতে পারতে হবে এবং লিখতে হবে। শুধুমাত্র দেশের মধ্যেই ফ্রীলান্সিং সীমাবদ্ধ নয়।  আপনি পৃথিবীর যে কোন দেশের লোকের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। আর ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে "ইংরেজি" স্বীকৃত তাই ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা অর্জন করুন।

আমি আর একটি বিষয়ের উপর লক্ষ্য দিতে বলব, একজন বাইরের সঙ্গে কথা বলার বাচন ভঙ্গি আপনাকে অবশ্যই একটি স্ট্যান্ডার্ড লেভেলে রাখতে হবে। মানেটা হচ্ছে আপনি যেভাবে একটি বিষয় বায়ারকে বোঝাচ্ছেন কিন্তু বায়ার সে বিষয়টি সেভাবে বুঝতেছেনা । তাহলে এখানে বোঝা যাচ্ছে যে আপনার বোঝানোর মধ্যে গ্যাপ গেছে।


উপরের কয়েকটি বিষয়ে আপনি যখন নিশ্চিত হবেন যে আপনি এই তিনটি রিকোয়ারমেন্ট ফুল-ফিল করে ফেলেছেন এখন আপনি মার্কেটপ্লেসে চলে যান। অর্থাৎ world-wide অথবা ইন্টার্নেশনাল মার্কেটপ্লেসগুলোতে একাউন্ট তৈরি করবেন।

ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) করার কয়েকটি শর্ত-

  1. আপনার একটি কম্পিউটার ( ডেস্কটপ অথবা ল্যাপটপ )  থাকতে হবে।
  2. কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ এর সঙ্গে ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে। 
  3. রাত জেগে কাজ করার ধৈর্য থাকতে হবে।
  4. ইংরেজি পড়তে, বুঝাতে, এবং বলতে পারতে হবে।
  5. প্রযুক্তিগত কোন সমস্যায় পড়লে ইন্টারনেটে সার্চ করার মাধ্যমে সমাধান বের করার এবিলিটি থাকতে হবে
  6. অবশ্যই আমি যে সেবাটি প্রদান করতে যাচ্ছেন সেটি সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা রাখতে হবে বা ভালোভাবে কাজ জানতে হবে।

কোথায় কাজ করবো?

সত্যি তো আপনি এত কষ্ট করে কাজ গুলো শিখে ফেলেছেন, এখন আপনি কোথায় কাজ করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তো, চিন্তার কোন কারণ নেই। এখন আপনি অবশ্যই মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে জানবেন। তারা আগে বলে নিতে চাই মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে কি কি বিষয়ে আপনি জানবেন  আগে থেকেই।

  • আপনি যে মারকেটপ্লেস টিতে কাজ করতে যাচ্ছেন সেটির জনপ্রিয়তা কি রকম।
  • অবশ্যই মার্কেটপ্লেস গুলোর  Privacy Policy Terms of Service গুলো পড়ে নিবেন।

তাহলে চলুন এখন জেনে নিই কয়েকটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস এর নাম। আমি মার্কেটপ্লেস গুলোর নামের সঙ্গে লিংকটাও দিয়ে দিব আপনারা চাইলে এখানে ক্লিক করে মার্কেটপ্লেস ঘুরে দেখতে পারেন।

Fiverr (https://www.fiverr.com/)

Freelancer.com (https://www.freelancer.com/)

➦ Upwork (https://www.upwork.com/)

➦ People Per Hour (https://www.peopleperhour.com/)

➦ 99 designs (https://99designs.com/)


যে কয়েকটি লিংক বা সাইটের নাম দেখতেছেন এগুলো সবই ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেস।


বাংলাদেশী একটি মার্কেট-প্লেসের নাম এবং লিঙ্ক দিচ্ছি-


shadhinkaj (https://shadhinkaj.com/)


কেন ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing) করবেন বা ফ্রিল্যান্সার হবেন?

যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা আপনার সময় মত কাজ করতে পারবেন। তবে ক্লায়েন্টের কাজ সময়মতো জমা দিতে হবে। আর সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে বাসায় বসে কাজটি করতে পারবে। নেই কোন বসের বকা-ঝকা, নেই টাইম মতো অফিসে যাওয়ার প্যারা।


পড়াশোনা শেষ করে আপনি যদি বেকার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পরিবার  হতাশ হাতে থাকবে। তাই তাদের হতাশা দূর করতে আপনি শুরু করে দিতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং । বাসায় বসে থাকি ইনকাম করতে পারেন  হাজার হাজার ডলার।


হয়তো ভাবছেন ফেলেছে তাদের ভবিষ্যত নেই আছে অবশ্যই আছে। যে দক্ষতা অর্জন করতে চান সেই দক্ষতা পরবর্তীতে অন্য কাজে লাগাতে পারবেন। অথবা একটি প্রতিষ্ঠান  দিয়ে নিজেই ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে গাইডলাইন দিতে পারেন।


ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing)  করার সুবিধা এবং অসুবিধা কি কি?

তাহলে চলুন জেনে নিই ফ্রিল্যান্সিং করার সুবিধা গুলো।

ফ্রিল্যান্সিং করার সুবিধাঃ

  • বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার ফ্রিল্যান্সারদের সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়ার একটা উদ্যোগ নিয়েছে তাই আপনি নানাভাবে সহযোগিতা পেতে পারেন।
  • ফ্রিল্যান্সিং যেহেতু একটি মুক্ত পেশা তাই আপনার সময় মত কাজগুলো করতে পারবেন।আজ তাই আপনার কাজে বসের কোন প্যারা নাই।
  • একজন ফ্রীল্যান্সার নিজেই ঠিক করতে পারে সে কতটুকু কাজ করতে পারবে বার নিতে পারবেন। এখানে আপনার ওপর কাজের চাপ দেয়ার কেউ নেই।
  • যেহেতু আনলিমিটেড কাজ করতে পারবেন সেটা আনলিমিটেড ডলার ইনকাম করতে পারবেন।আপনি চাইলে বাসায় নিজের ইচ্ছে মত একটি অফিস বানাতে পারেন।
  • পড়াশোনার পাশাপাশি অথবা অন্য কোন কাজের পাশাপাশি এই কাজটি করতে পারেন।
  • আপনি যখন একজন ভালো এবং প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হয়ে যাবেন কাজের উপর আপনার দক্ষতা অনেক বেশি হয়ে যাবে তখন আপনি আপনার সময়ের মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন। তারমানে আপনি তখন প্রতি ঘন্টায় কি পরিমান চার্জ করবেন একটি কাজের জন্য সেটি নির্দিষ্ট করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং করার অসুবিধাঃ

  • ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing ) করার সবথেকে বড় অসুবিধা কি হচ্ছে সবসময় কাজ পাওয়া যায় না। তবে যারা ভালো কাজ করে তাদের কাজের সমস্যা হয় না তারা কাজ পেতে থাকে।
  • বর্তমানে  ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় একটি প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে প্রতিযোগিতায় কাজ করতে হবে।
  • ফ্রিল্যান্সিং শুরুর দিকে আপনি কাজের রেট কম পেতে পারেন, রাত  জেগে কাজ করতে হবে, তাই আপনি ক্ষতি হতে পারে।
  • ফ্রিল্যান্সাররা যেহেতু বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করে থাকি তাই ভিন্ন ভিন্ন বায়ারদের  সন্তুষ্ট রাখতে একটু কষ্টই হয়ে যায়।

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং(Freelancing)  করে উপার্জিত ডলার গুলো তুলতে পারি?

আপনার কষ্টে উপার্জিত ডলার গুলোকে আপনি কিভাবে নিজের পকেটের ঢুকাবেন। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে আমরা উপার্জিত ডলার গুলোকে বাংলাদেশি টাকায় কনভার্ট করে নিজের পকেটের ঢুকাতে পারি।
অনেকগুলো উপায় রয়েছে তার মধ্যে আমার কাছে যেটি সবচেয়ে সহজ উপায় মনে হয়েছে সেটি হচ্ছে, ব্যাংক এশিয়ার একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার।

সেজন্য ব্যাংক এশিয়ায় একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে ফেলবেন নিজের নামে। এরপরে আপনি চলে যাবেন payoneer.com  এই সাইটে। এখানে একটি একাউন্ট করে ফেলবেন। এবার আপনার একাউন্ট থেকে  ঠিকঠাক মত ভেরিফাই করে নিবেন।


এখন আমি যদি বলি ফাইবারের কথা যে আমি ফাইবার থেকে ব্যাংকে ট্রান্সফার করবো ডলারগুলো কে, তাহলে আমি ফাইভার এ চলে যাব,  যাওয়ার পর উইথড্রো অপশন এ গিয়ে,  প্রথমবার পেওনিয়ার একাউন্টটিকে কানেক্ট করে নেব। আপনি এবার যত টাকা যত ডলার উইথড্র করতে চান এখান থেকে ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করুন একদম ফ্রী, কোন চার্জ নেই।

সবাই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকলে আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন এবং কোথাও বুঝতে সমস্যা হলে নিচে কমেন্ট করে জানাবেন, আপনারা কি ধরনের পোস্ট পড়তে চান কোমেন্টে জানাবেন অবশ্যই। সবাইকে ধন্যবাদ। 
হোম এ ফিরে যেতে এখানে ক্লিক করুন

7 Comments

  1. দারুন প্রকাশ http://bdlancer.net/ আপনি যদি এই ওয়েবসাইট এ ব্যাকলিংক দিতেন খুশি হতাম

    ReplyDelete
  2. দারুন লিখেছে , ধন্যবাদ , এই বিষয়ে আমার একটি ওয়েবসাইট রয়েছে - http://bdlancer.net/ backlink পেলে উপকৃত হতাম

    ReplyDelete
  3. অনেক সুন্দর ও তথ্য বহুল পোস্ট করছেন । ফ্রিল্যান্সিং কি

    ReplyDelete
  4. কথা গুলো আমার ভালো লাগছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ��

      Delete
Post a Comment
Previous Post Next Post