এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করুন। পর্ব-১

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করুন। পর্ব-১


আপনি যদি কখনো ইনকাম নিয়ে ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার চোখের সামনে এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate marketing) কথাটি এসেছে।  হ্যাঁ বন্ধুরা আপনি যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে অবশ্যই জানতে পারবেন কি ভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করা যায়।


এফিলিয়েট মার্কেটিং

  1. এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) কি?
  2. এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) মার্কেটিং করা যায়?
  3. এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) সাইট সমূহ।
  4. এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) শুরু করতে কি কি লাগবে?
  5. এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরুর পূর্বে কি কি জানতে হবে?
  6. কেন এফিলিয়েট(Affiliate) মার্কেটিং করবেন?

আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর থাকছে এই পোস্টটিতে। তাহলে চলুন দেরী না করে শুরু করা যাক কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।



এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করুন

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি যারা অনলাইনে প্রোডাক্ট ক্রয় করতে পছন্দ করি। আর বর্সতমান সময়ে E-Commerce অর্থাৎ অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোর মাধ্যমে বেচাকেনা হরদম হয়ে থাকে। দিন দিন মানুষ এই অনলাইন শপ গুলোর  উপর নির্ভর হয়ে পড়ছে।


আর এইসব বড় বড় অনলাইন ভিত্তিক  মার্কেটপ্লেস গুলো তাদের পণ্যগুলো বেশি বেশি বিক্রি করার জন্য একটা অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করে। যে পদ্ধতিটি এফিলিয়েট(Affiliate) প্রোগ্রাম নামে পরিচিত।


এফিলিয়েট(Affiliate) মার্কেটিং করতে হলে  যেসব ই-কমার্স ভিত্তিক ওয়েবসাইট গুলোতে এফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু রয়েছে সেসব ওয়েবসাইটে এফিলিয়েট(Affiliate) পার্টনারে জয়েন হতে হবে। 


আপনার মাধ্যমে কম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল হলে, প্রত্যেকটি সেল থেকে আপনি নির্দিষ্ট একটি কমিশন পাবেন। এটাকে এফিলিয়েট(Affiliate sell) সেল বলে।


এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে কি কি লাগবে?

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে  আপনার কি কি জিনিস থাকা প্রয়োজন তা নিচে দেয়া হলো:

  1. নিচের একটি ব্লগার টাইপ সাইট। অথবা আপনার নিজের একটি  এমন ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে প্রতিনিয়ত ভিজিটর অর্থাৎ ট্রাফিক আসে।
  2. একটি ভাল মানের ইউটিউব চ্যানেল।
  3. অথবা আপনি ভালো ইমেইল মার্কেটিং করতে পারেন।
  4. অথবা ফেসবুক পেজ রয়েছে, এবং আপনার পোস্টগুলোতে ভালো ভালো হয়।

উপরের কয়েকটি মাধ্যমের মধ্যে যদি একটিও আপনার মধ্যে থাকে তাহলে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) শুরু করতে পারেন এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরুর পূর্বে কি কি জানতে হবে?

  1. কিওয়ার্ড রিসার্চ।
  2. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ।
  3. ট্রাফিক জেনারেটর বিভিন্ন উপায়।
  4. কিভাবে একটি ওয়েবসাইট কাজ করে।
  5. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের(SEO) ধারণা থাকতে হবে। 
  6. ভালো মানের কনটেন্ট রাইটিং জানতে হবে।



কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়?


এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি যদি অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সেই ওয়েবসাইট গুলো খুজে বের করতে হবে অর্থাৎ সেই ই-কমার্স সাইট গুলো খুজে বের করতে হবে যে এই কমার্স সাইট গুলোতে এফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু রয়েছে।


এবং আপনাকে সেই কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর সকল নীতিমালা মেনে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।

  1. এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ জয়েন করার পর আপনি কোন ধরনের প্রোডাক্ট গুলো নিয়ে কাজ করতে চান সেগুলো নির্বাচন করুন।
  2. আপনার বেছে নেয়া প্রোডাক্টগুলো নির্বাচন করার পর আপনি একটি এফিলিয়েট লিংক পেয়ে যাবেন। এবার আপনার কাজ হলো এই লিংকগুলো আপনার ফেসবুক পেজ ইউটিউব অথবা ওয়েবসাইট ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া। 
  3. আপনার ছড়িয়ে দেয়া বা শেয়ার করা লিংকটি থেকে যদি কোন ব্যক্তি কোন একটি প্রোডাক্ট কিনে থাকে তাহলে সেই প্রোডাক্ট বিক্রির মাধ্যমে আপনি একটি কমিশন পাবেন।


এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট। যে ইকমার্স সাইট গুলোতে এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম রয়েছে?


আপনি যদি গ্লোবালি এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) করতে চান অর্থাৎ ওয়ার্ল্ড ওয়াইড এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চাইলে নিচের এই মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করতে পারেন।


  1. AMAZON
  2. ALIEXPRESS
  3. EBAY
  4. ENVATO
  5. GODADDY


আর যদি বাংলাদেশের কোন ই কমার্স সাইট থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) করতে চান তাহলে নিচের এই সাইটগুলোতে কাজ করতে পারেন-


  1. BD SHOP
  2. DARAZ
  3. BANGLA SHOPPERS
  4. BOHUBRIHI

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা যাবে


আপনার যদি বেশ কিছু জায়গায় এক্সপার্ট হয়ে থাকেন বা হতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনারা এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে একটি ভালো প্যাসিভ আর্নিং সোর্স জেনারেট করতে পারবেন। কিছু সংখ্যক  টেক জায়ানরা  এফিলিয়েট মার্কেটিং করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে প্রতিমাসে।


আপনি তাদের মত না হতে পারলেও প্রতি মাসে একটি ভালো  ইনকাম করতে পারবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ইনকাম নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। যেমন-

  • যে সমস্ত প্রোডাক্ট আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করেছেন সেগুলোর চাহিদা কি রকম। 
  • আপনি কত দামি প্রোডাক্ট এর এফিলিয়েট মার্কেটিং করতেছেন। 
  • প্রত্যেক বিক্রিতে কি পরিমাণ কমিশন প্রদান করে। 
  • আপনি কতটি প্রোডাক্ট এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বিক্রি করতেছেন।

কেন এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন?


বর্তমান সময়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) একটি জনপ্রিয় এবং স্মার্ট পেশা। দিন দিন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে, কারণ এটির রয়েছে একটি নিজস্বতা। যেমনঃ-

  • এই কাজে নিজের কোন পণ্য প্রয়োজন হয় না। 
  • আপনি চাইলে ঘরে বসে এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) করতে পারবেন।
  • সব সময় ওয়েবসাইটে  অ্যাক্টিভ না থাকলেও আপনার ইনকাম হতে থাকবে।
  • পছন্দমত পণ্য নিয়ে  এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) করা যায়।
  • যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) নিয়ে কাজ করে তাদের রয়েছে সময়ের স্বাধীনতা।
  • আপনার যদি একটি এফিলিয়েট(Affiliate) সাইট থাকে তাহলে আপনি একাধিক উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন।
  • আনলিমিটেড ইনকাম করা সম্ভব।
  • এফিলিয়েট(Affiliate) মারকেটিং করার জন্য কোন বিড করার প্রয়োজন হয় না।

     

ব্লগিং VS  অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং


ব্লগিং হচ্ছে একটি কমপ্লিট সলিউশন। কারণ আপনি ব্লগিং এর পাশাপাশি এফিলিয়েট(Affiliate) মার্কেটিং করতে পারবেন। কারণ এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে ব্লগিং-এর একটি ছোট্ট অংশ।


পুরো বিষয়টি আমি ক্লিয়ার করে দিচ্ছি। 


যদি এফিলিয়েট(Affiliate) মার্কেটিং করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার একটি ওয়েবসাইটের প্রয়োজন রয়েছে।এখন এই ওয়েবসাইটে আপনাকে কনটেন্ট পাবলিশ করতেই হবে। একটু চিন্তা করে দেখুন বিষয়টি কি দাঁড়ালো।


তার থেকে ভালো হচ্ছে, আপনি ব্লগিং এর উদ্দেশ্যে একটি ওয়েবসাইট বানালেন এবং নিয়মিত পোস্ট করতে থাকলেন। একটা সময় আপনি অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভাল পেয়ে গেলেন। আপনি চাইলে এই সাইটের মধ্যেই এফিলিয়েট(Affiliate) মার্কেটিং শুরু করে দিতে পারেন।


তাই আমি সবাইকে এটাই বলব যে আপনারা ব্লগিং শুরু করেন  অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইট নিয়ে নিয়মিত পোস্ট দেয়া ইত্যাদি কাজগুলো সম্পন্ন করেন এবং সেই সাইটের মধ্যে অ্যাডসেন্স এবং এফিলিয়েট(Affiliate) প্রোগ্রাম  এ জয়েন করে এফিলিয়েট লিংক গুলো শেয়ার করার মাধ্যমে একটি ভালো  আর্নিং জেনারেট করতে পারবেন।


আর এভাবেই আপনারা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

FAQ

১। এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে কি টাকা লাগে?

উত্তরঃ এফিলিয়েট(Affiliate) প্রোগ্রাম এ জয়েন করতে আপনার কোন টাকা লাগবে না।


২। কি ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করা যায়?

উত্তরঃ যেসব প্রোডাক্ট এর চাহিদা সব সময় রয়েছে এমন প্রোডাক্ট নির্বাচন করুন।


৩। মোটামুটি চাহিদা রয়েছে এমন কয়েকটি প্রোডাক্ট এর উদাহরণ দিতে পারবেন?

উত্তরঃ মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ডোমেইন-হোষ্টিং, জামা কাপড়, বই  ইত্যাদি। 


৪। আয় করা টাকা কিভাবে তুলতে পারি?

উত্তরঃ প্রত্যেকটি অ্যাফিলিয়েট(Affiliate) প্রোগ্রাম এর  জন্য ব্যাঙ্ক উইথড্র অপশন থাকে। তাই আপনি কয়েকটি ধাপ অনুসরন করলেই আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা তুলতে পারবেন।


৫। এফিলিয়েট প্রোডাক্ট কিভাবে প্রমোশন করা যায়?

উত্তরঃ যেকোনো এফিলিয়েট(Affiliate) প্রডাক্ট প্রমোশন করতে হলে অবশ্যই আপনার একটি ওয়েবসাইট অথবা একটি ব্লগার সাইট অথবা একটি ইউটিউব চ্যানেল অথবা একটি ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। এবং সেগুলো দিন নিয়মিত ভিজিটর ট্রাফিক আসে এমন সাইট হতে হবে। 


কিছু কথা:


এই ছিল এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জনের সামান্য কিছু ধারনা। আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং(Affiliate Marketing) করে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে আমাদের দ্বিতীয় পর্বটি অবশ্যই পড়বেন।


আর ও পড়তে নিচের দেয়া লিঙ্কে ক্লিক করুন-

বন্ধুরা এই ছিল এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন  নিয়ে সহজ কিছু আইডিয়া। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভাল লাগে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট এ আপনার মতামত জানাতে পারেন। 
আমাদের সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

3 Comments

Post a Comment
Previous Post Next Post