সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পতন

সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পতন 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের(Soviet Union) অবসান পর্যন্ত এর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হলেও দেশটির পতন হয়েছিল এর অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পতন
সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পতন

কিভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়েছিল?

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন শুরু হয়েছিল এর সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভ এর হাত ধরে। মিখাইল গর্বাচেভ ক্ষমতায় ছিল 1985 সাল থেকে 1991 সাল পর্যন্ত। দেশজুড়ে অসন্তোষ মোকাবেলা করতে মিখাইল গর্বাচেভ অনেকগুলো সংস্কার বাস্তবায়ন করেছিল।

1965 সাল থেকে 1950 সাল পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন(Soviet Union) এর ইরা অফ স্টেক নেশন এর যুগে মিখাইল গর্বাচেভ  ক্ষমতায় এসেছিল। এই স্থরগিতার অনেকগুলো কারণ ছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো লিউনিট বেস বিয়ার এর  শাসনামলে বাস্তবায়িত অর্থনৈতিক সামাজিক ও সামরিক সিদ্ধান্ত।

সামরিক শক্তি ও মহাকাশ অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এসব কারণে অত্যধিক খরচের বোঝা বহন করতে গিয়ে সোভিয়েত অর্থনীতি ধাবিত হচ্ছিল উৎপাদন ঘাটতি অস্থিরতার দিকে। এছাড়াও দশক ধরে অত্যাচারের কারণে সরকার জনগণের আস্থা হারাচ্ছে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছিল যৌন অসন্তোষ ও আন্দোলন।

গর্বাচেভ নতুন নেতা হিসেবে ক্ষমতায় এসে স্থবিরতা দূর করতে দুইটি সংস্কার নীতি গ্রহণ করেছিল।


প্রথমটির নাম ছিল গ্লাস নস যার অর্থ স্বচ্ছতা। কমিউনিস্ট পার্টি গোপন পুলিশ বাহিনীর মাধ্যমে অনেকদিন ধরে বিরোধী রাজনৈতিক মদ করছিল। গ্লাস নস নিতি এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে এবং পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার অনুপ্রেরণা যোগায়। এই সচ্ছতা নিতি সোভিয়েত সরকারের ওপর কমিউনিস্ট  প্রভাব কমাতে চেষ্টা করে। যা পরবর্তীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক বহুদলীয় নির্বাচনের পথ সুগম করে।


দ্বিতীয় নীতির নাম ছিল পেরেস্ত্রইকা বা পুনর্গঠন। এটা ছিল সরকারনিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক কাঠামো থেকে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টা। যার লক্ষ্য ছিল সম্পত্তিতে ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠা করা। এই গ্লাসনস্ত ও পেরেস্ত্রইকা নীতি অর্থনীতি ও রাজনীতিকে সম্পূর্ণভাবে বদলে দিয়েছিল।


দুর্ভাগ্যবশত এই ব্যাপক পরিবর্তন এত বছরের রাষ্ট্রশাসন কে বদলে দিতে ব্যর্থ হয়। মিখাইল গর্বাচেভ এর ভাষায়  নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পূর্বেই পুরনো ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং সামাজিক সংকট আরো তীব্র হয়েছে।


এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন( Soviet Union) এবং দূরবর্তী রাজ্যসমূহের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার মানের ব্যাপক অবনতি হয়েছিল। ধীরে ধীরে স্বচ্ছতা নিতির কারনে পূর্ব ইউরোপীয় রাজ্যসমূহ উন্মুক্ত নির্বাচন আয়োজন করতে শুরু করে।


পোল্যান্ডের নির্বাচনে একটি নন কমিউনিস্ট পাটি বিজয়ী হয় এবং পোল্যান্ডের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। পোল্যান্ড ই সর্বপ্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসে।


এর পরেই অন্যান্য নির্ভরশীল রাজ্যগুলো শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা পরিবর্তনের চেষ্টা শুরু করে। এই প্রচেষ্টা সমগ্রও সোভিয়েত ইউনিয়ন(Soviet Union) জুড়ে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি করে। 1991 সালের আগস্ট মাসে চরমপন্থী কমিউনিস্ট পার্টি সদস্যের  মিখাইল গর্বাচেভ বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে।


এ অভ্যুত্থান সফল না হলেও গর্বাচেভ কমিউনিস্ট পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন।এই অভ্যুত্থান চলা কালেই একাধিক রাজ্য স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। 1991 সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ইউক্রেন, রাশিয়া, বেলারুশ, আর্মেনিযইয়া , আজারবাইজান, কাজাকিস্তা্ন তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান ইউনিয়ন ত্যাগ করে।


এর অল্প কিছুদিনের মধ্যে শুধুমাত্র কাগজে-কলমে জর্জিয়ায় ক্ষমতায় থাকা সোভিয়েত ইউনিয়ন (Soviet Union) বিলুপ্ত হয়। এভাবেই 69 বছরে গড়ে ওঠা বিশ্বশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হয়।


আর ও আর্টিকেল পড়তে নিচের দেয়া LINK গুলো ভিজিট করতে পারেন !


বন্ধুরা এই ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন এর পতন নিয়ে আর্টিকেলআর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভাল লাগে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট এ আপনার মতামত জানাতে পারেন। 

আমাদের সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post